অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইজরায়েলি বিমান কতৃক আল আহলি আরব হাসপাতালে বোমা বর্ষণের
দরুন প্রায় ৫০০ জন ফিলিস্তিনি খুন হয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রক সরাসরি
ইজরায়েল কে এই হত্যার জন্য দায়ী করেছে। খুব প্রত্যাশিতভাবেই, যেন বিশ্ব রাজনীতিতে
চাপের মুখে না পড়াতে হয় তাই ইজরায়েল হামলার দায় অস্বীকার করে পাল্টা ফিলিস্তিনি
ইসলামিক জিহাদ(পি আই জে) কে হামলার জন্য দায়ী করেছে । পি আই জে সেটা তীব্রভাবে
অস্বীকার করেছে।
ইজরায়েল কতৃক বিমান হামলায় মৃতের সংখ্যা ৫০০ জন ছাড়িয়ে ঘটনার ব্যাপকতা এবং
ভয়াবহতা বহুগুণ বাড়িয়ে তুলেছে। ইজরায়েল এর দ্বারা সংগঠিত পূর্ববর্তী সকল
অমানবিক বর্বরতাকে এই বিমান হামলা পিছনে ফেলে দিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য
মন্ত্রণালয়ের কাছে থেকে জানা গেছে যে সরাসরি বোমা বিস্ফোনের ফলে ৪৭১ জনের
তাৎক্ষনিক মৃত্যু হয়েছে এবং আরও শতাধিক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে
গেছে।
ঘটনার কেন্দ্রস্থল আল আহলি আরব হাসপাতালকে জেরুজালেমের এপিসকোপাল ডায়োসিস
পরিচালনা করে আসছিল এতদিন যাবৎ। এই হাসপাতালটির অবস্থান অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার
কেন্দ্রে হওয়ায় , ইজরায়েল কতৃক অনবরত বিমান হামলায় বাড়ি ঘর হারানো বহু
ফিলিস্তিনির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছিল এই হাসপাতাল। শেষ পর্যন্ত তাদের হাতেই খুন
হতে হলো সেইসব গৃহহীন ফিলিস্তিনিদের।
এই হত্যাকাণ্ড কে কেন্দ্র করে বিশ্বজুড়ে মূলত মধ্যপ্রাচ্যের জনগণ ক্ষোভে ফেটে
পড়েছে। জর্ডান সহ ইজরায়েল অধিকৃত ওয়েস্ট ব্যাংকের জনগণ এই হত্যাকাণ্ডের
প্রতিবাদে ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ওয়েস্ট ব্যাংকের
শতাধিক জনগণ ইজরায়েলি সৈন্যদের সাথে সংঘর্ষের সময় ' হামাস ' মিলিটান্টদের
সমর্থনে স্লোগান দিতে থাকে। অন্যদিকে এই অমানবিক হামলার প্রতুত্তরে ফিলিস্তিনি
সীমান্ত সৈন্যরা ওয়েস্ট ব্যাংকের নাবলাস, টুবাস এবং জেনিন শহরে প্রবেশ করে
ইজরায়েলি সৈন্যদের উপর আক্রমন চালাতে থাকে।
আন্তর্জাতিক স্তরেও এই পৈশাচিক হামলার তীব্র সমালোচনা করা হচ্ছে। তবে এটাও খেয়াল
করলে দেখা যায় যে ইজরায়েল ও আমেরিকা পন্থী অনেক নেতা এই ভয়াবহ হামলার বিরোধিতা
তো করেননি বরং উল্টে ফিলিস্তিনিদের দিকে ইঙ্গিত করেছে হামলার দায়ের জন্য।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো এক টুইটার পোস্ট লিখেছেন " হাসপাতালে
হামলা কোনো কিছুই প্রমাণ করে না" এবং অতঃপর তুঘলকি নেতার মত তিনি ঘটনার তদন্ত
দাবি করে বসেছেন। এদিকে ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু হামলার দায়
অস্বীকার করে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে হাস্যকর সব তথ্য সাজিয়েছেন এবং বিশ্ব জুড়ে
সংবাদ মাধ্যম সেটার প্রচারে মেতে উঠেছে।
হাসপাতালের মত জায়গায় আক্রমণ করে শতাধিক নিরীহ জনগনকে খুন করে কোনো জাতিকে তার
স্বভূমি ফিরে পাওয়ার অদম্য আশা কে দমন করা তো যায়ই না বরং এধরনের ঘটনা
অত্যাচারিত জাতির মনে এক ধরনের ক্ষত সৃষ্টি করে যা তার যন্ত্রণা কে শক্তিতে
রূপান্তরিত করে দেয়।
If you have any doubt, pls let me know