নারী ক্ষমতায়নের এই বিলের অদূর সুদৃঢ় ভবিষ্যত নিয়ে মহিলা ভোটার এবং আইনজীবীদের মধ্যে হতাশা তো রয়েছেই। কারণ অতীতেও এহেন বিল প্রবর্তিত হয়েছিল ভারতীয় রাজনীতিতে চলমান লিঙ্গ বৈষম্য কে ঠেকানোর উদ্দেশ্যে। তারপরেও সংসদীয় রাজনৈতিক দলগুলির ঐক্যমত এবং রাজনৈতিক কৌশল এর অভাবে ভারতীয় রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহন উল্লেখযোগ্য ভাবে কম দেখা যায় ।
প্রাথমিকভাবে অটলবিহারী বাজপেয়ীর সরকার মহিলাদের জন্য ভারতীয় রাজনীতিতে ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষিত করে নারী ক্ষমতায়নের জন্য দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। বিল পাশ করা নিয়ে তৎকালীন সরকারের নিবেদন স্পষ্ট ছিল এবং সংসদের সদস্যরা এই বিলের সাফল্যের পক্ষে সমর্থন ও দিয়েছিলেন। কিন্ত বিলটিকে ঘিরে রাজনৈতিক পটচিত্র জটিলতায় ভরে গিয়েছিল কারণ বিরোধী রাজনৈতিক দল অনগ্রসর শ্রেণীর (ও বি সি ) ইস্যুতে প্রশ্ন করলে কেন্দ্রীয় সরকার সেই বিরোধিতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। ফলে বাজপেয়ী সরকার প্রস্তাবিত বিলের স্বচ্ছতা এবং প্রয়োজনীয় কৌশলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে আসে যা বর্তমান বিলে ও স্পষ্ট।
অন্যদিকে আরেক সংসদীয় দল সমাজবাদী পার্টি(এস পি ) ও রাষ্ট্রীয় জনতা দল(আর জে ডি) এর বিরোধিতা সদ্য পাশ হওয়া বর্তমান বিলটিকে আরো জটিল করে তুলেছে। শুধুমাত্র অনগ্রসর শ্রেণী( ও বি সি )- র মহিলাদের কথা চিন্তা করে তাদের এই বিরোধিতা নয়, , বরং এর ফলে আঞ্চলিক এলাকায় তাদের যে পরিচিতি এবং এবং এই বিলের ফলে তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতার উপর যা প্রভাব পড়বে তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। নিজ এলাকায় প্রতিদ্বন্দ্বী দলের কাছে মহিলা ভোটার নিয়ে চাপে পড়ার ভয়ে সমতা এবং বহুজন সমাজবাদী এর মত সংসদীয় দলগুলি এই বিলের সরাসরি বিরোধিতা করেছে। নিজস্ব প্রতিদ্বন্দ্বী এলাকায় আসন আবর্তনের বিষয়টিও চিন্তায় ফেলেছে তাদের।
এছাড়া এহেন বিল সেই সমস্ত রাজনৈতিক সংসদীয় দলগুলিকেও বিপদের মুখে ফেলবে যারা নির্বাচনে সেরকম মহিলা মুখ তুলে আনেনি কোনোদিন। ভারতীয় রাজনীতিতে বিভিন্ন সংসদীয় দলের দ্বারা নারী নেত্রী উৎকর্ষন এর চিত্র খুব একটা আহামরি না।
নারী নেত্রীর ক্ষমতা ও রাজনীতিতে তাদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে দক্ষিণপন্থী ও বামপন্থী রাজনীতির তুলনা করলে পার্থক্য স্পষ্ট উঠে আসে। বামপন্থীদের মধ্যে তৃণমূল স্তরেও ওয়ার্কিং ক্লাস মহিলা সদস্য পাওয়া যায় যা সংসদীয় দক্ষিণপন্থী দলগুলোতে খুবই দূর্লভ। সূত্র মারফত জানা গেছে ২০২৪ নির্বাচনের আগে কিংবা ২০২৮ এর আগে এই বিল প্রণয়ন সম্ভব না। এমত অবস্থায় আন্দাজ করাই যায় বিজেপির মত এক চরম দক্ষিণপন্থী এবং ফ্যাসিবাদী দল এই বিল এনে নারীদের কাছে ভুয়ো প্রশংসা কুড়িয়ে নির্বাচনে ভালো ফল করতে চায়।
আবার নিজেদের সাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে মহিলাদের অংশগ্রহন করানোর ইতিহাস ও বিজেপির এবং সংঘ পরিবারের রয়েছে। বিজেপি কতৃক নিজদের উদ্দেশ্যে উল্লিখিত বিল ব্যবহৃত হলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এবং ঘৃনা ছড়ানোর রাজনীতিতেও মহিলাদের অংশগ্রহন বৃদ্ধি করবে সঙ্ঘ পরিবার।
যদিও বিল প্রণয়ন নিয়ে প্রচুর অনিশ্চয়তা ও বিরোধিতা রয়েছে, তবে সংসদীয় রাজনৈতিক দলগুলির মহিলাদের জাতিগত এবং লিঙ্গগত সমস্যা না মিটিয়ে জটিলতা আরো বাড়িয়ে তুলবে।
If you have any doubt, pls let me know